রোজার ফরজ কয়টি - রমজান মাসের ফজিলত ও রোজার গুরুত্ব

 এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন রোজা কাদের উপর ফরজ করা হয়েছে , কেন করা হয়েছে এছাড়া আরও জানতে পারবেন রোজার ফরজ কয়টি ও কি কি, রোজা সম্পর্কে হাদিসে কি বলা হয়েছে রোজা রাখা কি ফরজ এবং রোজার ইতিহাস সম্পর্কে।



এই আর্টিকেলটি পুরো পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো জানতে পারবেন রোজার মাসে কিছু কিছু কারণে রোজা না রাখলে সেই দিনগুলোর সংখ্যা পরবর্তীতে পূরণ করতে পারবেন কিভাবে।

ভূমিকা

রমজান মাস হল বরকত নয় মাস। এ মাসের আগমনের কথা শুনলে ঈমানদারগণ আনন্দ উপভোগ করতে থাকেন। এই মাসে আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বাণী আল কুরআন নাযিল করা হয়েছে। এই মাসে বান্দাদের উপর আল্লাহ তায়ালা রোজা ফরজ করেছেন।

রমজান মাসের ফজিলত

রমজান মাস একটি পবিত্র মাস। রমজান মাসে মানুষ সকল প্রকার খারাপ কাজ ও অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে দুরে থাকে এবং রমজান মাসে সকল মুসলমান তার সাধ্যমত ইবাদত বন্দেগি করার চেষ্টা করে থাকে।রমজান মাসের প্রতিটা সময় প্রতিটা মুসলমান এর জন্য গুরুত্বপুর্ন।রমজান মাসের সময় গুলো বেশি বেশি করে ইবাদত বন্দেগি করা উচিত।

রমজান মাসে আল্লাহ সকল মুসলমানকে ভাল কাজ , নেক আমল ও ইবাদত বন্দেগি করতে উৎসাহ করার জন্য জান্নাতের সকল দরজা খুলে দেন।আর জাহান্নামের সকল দরজা বন্ধ করে দেন যেন সকল ঈমান্দারদের গুনহা কম হয়।রমজান মাসে আল্লাহ তাআলা শয়তানকে শৃঙ্খলাব্ধ করে রাখেন যেন মুসলমানরা পথ ভ্রষ্ট না হয়।

রমজান মাসের আগমনের জন্য সকল মুসলমান আনন্দ প্রকাশ করেন।এই মাসে পুর্বের সকল পাপ কাজের গুনাহ গুলকে ক্ষমা করে দেওয়া হয় আল্লাহর কাছে দোয়া আর পার্থনা করার মাধ্যমে।

রোজার ফরজ কয়টি ও কি কি

রোজার ফরজ দুইটি। 
  • রোজার জন্য নিয়ত করা
  • পানাহার ও কামাচার পরিত্যাগ করা। 
১.রোজার দুই ফরজ এর মধ্য প্রথমটি হলো নিয়ত করা।আল্লাহ তাআলার আদেশ রোজা পালন করার জন্য নিয়ত করতে হবে । আর মহানবী হযরত মহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন , নিয়তের অপর সমস্ত কর্ম নির্ভরশীল এবং তাই প্রাপ্য হয় যেইটা সেই নিয়ত করে।

2. ২য় টি হলো পানাহার ও কামাচার ত্যাগ করা। ফজর এর সময় শুরু হওয়া থেকে সুর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত সকল খারাপ বা নষ্ট কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে যে কাজ রোজা নষ্ট কোরে। ততক্ষন পর্যন্ত খাও বা পান করো যতক্ষন না ভোরের কালো রেখা থেকে সাদা রেখা পৃথক হয়ে না যায়। আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় ইস্ত্রিদের সাথে সহবাস করোনা।

সুতরাং তোমরা এইগুলর নিকটে যেও না। এই ভাবে আল্লাহ তাআলা মানুষের সামনে নিদর্শনাবলী স্পষ্ট করেছেন, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো।

রোজা সম্পর্কে হাদিস

আল্লাহ তাআলা পবিত্র আল কোরআনে রোজা সম্পর্কে একাধিক আয়াত নাজিল করেছেন।মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনেক দিক নির্দেশনা রয়েছে হাদিসে রমজান ও রোজা সম্পর্কে।রোজা ও রমজান সম্পর্কে কিছু হাদিস নিচে উল্লেখ দকরা হলো,যাতে মানুষ এ বিষয়ে অবহিত হতে পারে।

  • হে মুসলমানগন,তোমাদেরর জন্য রোজার বিধান দেওয়া হলো, যেই বিধান তোমাদের ঈমান্দারগনকে দেওয়া হয়েছিলো, যাতে করে তোমরা মুত্তাকী হতে পারো। (সুরা আল বাকারা আয়াত ১৮৩)

  • রোজা নির্দিষ্ট কিছু সময় ও দিনের জন্য।তোমাদের মধ্য কেউ সফরে থাকলে অথবা কেউ অসুস্থ থাকলে অন্য সময় বা দিন পুর্ন করতে পারবে। আর এই সময় বা দিন যাদের কষ্ট দেয় তাদের উচিত বা কর্তব্য একজন অভাবগ্রস্তকে খাবার দান করা। তোমাদের মধ্য কেউ যদি সওয়াব এর জন্য খুশি হয়ে সৎকাজ করে তার জন্য অধিক কল্যানকর।তোমাদের জন্য অধিক কল্যানকর রোজা পালন করা যদি তোমরা তা জানতে।
  • পবিত্র আল কোরআনে অবতীর্ন করা হয়েছে যে রমজান মাস মানুষের সৎ কাজের স্পষ্ট দিক নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী।সুতরাং তোমাদের মধ্য যদি কেউ রমজান মাস পান তাহলে এ মাসে রোজা পালন করবে।

রোজা সম্পর্কে আলোচনা

আল্লাহ তাআলা বলেছেন হে মুসলমানগন তোমাদের অপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যা তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের অপর করা হয়েছিল যার ফলে তোমরা তাকওয়ার ওধিকারী হতে পারো।মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে বলেন সেই ব্যাক্তি ধংস হোক যে রমজান মাস পাওয়ার পরও তার নিজের গুনহা গুলোকে মাফ করাতে পারলোনা।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে ব্যাক্তি রমজান মাসের রোজা বিনা কারনে ত্যাগ করবে সেই ব্যাক্তি কাফির।সেই ব্যাক্তি সারা বছর রোজা পালন করার পরও তার পাপের খেসারত দিতে পারবে না যেই ব্যাক্তি ইসলামের শরীয়তের কারন ছাড়া যে ব্যাক্তি একটা রোজা পালন ছেরে দিবে।

রোজা রাখা কি ফরজ

রমজান মাস বরকতের মাস।ইসলামের বিধান অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্ক সকল মুসলমানের জন্য রমজান মাসের প্রতিটি রোজা পালন করা ফরজ।যারা অমুসলিম তাদের জন্য রমজান মাসের রোজা পালন করা বেশি জরুরি নয়।অমুসলিম ব্যক্তিদের মধ্য যদি কেউ রোজা পালন করে তা ধর্তব্য হবে না কারন তারা ইসলয়ামকে বিসাস করে না।

যারা শারিরীক ও মানষিক ভাবে সুস্থ ঐ ব্যাক্তির জন্য রোজা পালন করা আবশ্যক।অপ্রাপ্তবয়স্ক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ ব্যাক্তির জন্য রোজা রাখা জরুরি নয়।কোনো ব্যাক্তি তার নিজ শহর ও তার নিজ বাসায় অবস্থানকারির জন্য রোজা রাখা ফরজ।যদি কোন মুসলমান ব্যাক্তি তার শহর থেকে অন্য দেশ বা দূরে কোথাও যায় সেই ব্যাক্তির জন্য রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে।

রোজার ইতিহাস

রোজা আরবি শব্দ এর অর্থ হলো উপবাস থাকা। আরবি ভাষায় এটিকে সাওম অথবা সিয়াম বলা হয়।সিয়াম অথবা সাওম শব্দের অর্থবিরত থাকা।ইসলামের ভাষায় সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো কিছু খাওয়া, স্ত্রীর সাথে সহবাস থেকে বিরত থাকাকেই সিয়াম, সাওম অথবা রোজা বলে।

কোরআনে যে আয়াতের মাধ্যমে রোজা ফরজ করা হয়েছিল সেই আয়াতেই বলে দেওয়া হয়েছে তোমাদের পুর্ববর্তিদের অপর ও রোজা ফরজ করা হয়েছিল।হযরত (আ.)-এর সময়ে শুভ্রতার দিনসমূহ তথা চান্দ্রমাসের প্রতি ১৩,১৪ ও ১৫ তারিখ সিয়াম, সাওম বা রোজা রাখতে হতো।নুহ (আ.) এর যুগেও রোজা রাখা হতো।

হযরত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি অয়াসাল্লাম বলেন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা ছাড়া সারা বছর রোজা পালন করতেন নুহ (আ.)।

শেষ কথাএই আর্টিকেলটির মাধ্যমে রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আশা করি রোজা সম্পর্কে আমি আপনাকে অনেক কিছু বোঝাতে পেরেছি। যদি আপনার এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। আর অন্য কোন বিষয়ে জানার থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url